
করোনা মহামারির মাঝে স্টুডেন্টদের জন্য

১৬৬৫ সালে ইংল্যান্ডে হঠাৎ করে মহামারি দেখা দেয়াতে ক্যাম্পাস বন্ধ্ হয়ে গেল দুই বছরের জন্য। অনাকাঙ্খিত ছুটি পেয়ে ছেলেটি চলে গেল গ্রামের বাড়িতে। তার হাতে তখন অঢেল সময়।ছেলেটি তখন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বয়স মাত্র ২৩ বছর।সে ভাবল হঠাৎ পড়ে পাওয়া সময়টাকে এবার ঠিকঠাক কাজে লাগাবে। ছেলেটি মেতে উঠল বিজ্ঞান সাধনায়। দিন-রাত বিজ্ঞানের জটিল বিষয় নিয়ে মেতে থাকে গভীর নিমগ্নতায়। ছেলেটির সাধনা বৃথা গেল না।
১৬৬৫-৬৬ এই দুই বছরের অনাকাঙ্খিত অবসর সময়ে ছেলেটি বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠিত ভিত নাড়িয়ে দিল। ছেলেটি একে একে আবিষ্কার করল ক্যালকুলাস এর একাংশ, অভিকর্ষ তত্ত্ব, বলবিদ্যার মৌলিক সূত্রাবলী। এই দুটি বছর ছিল তাঁর জীবনের সবচেয়ে গৌরবময়, সবচেয়ে দিব্যজ্যোতিপূর্ণ, সৃজনোল্লাসমুখর সময়কাল।ছেলেটি আর কেউ নয়, স্যার আইজ্যাক নিউটন। বলা হয় যে ওই দুটি বছরের মধ্যে যুবক নিউটন যা আবিষ্কার করেছিলেন তার সমতুল্য কাজ তাঁর ৮৪ বছরের দীর্ঘ আযুষ্কালে আর কখনো করা হয়নি।
সারা পৃথিবীর মতো আমাদের দেশও হঠাৎ এক অজানা শঙ্কার দোলাচলে দুলছে। চারিদিকে অনিশ্চয়তা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের হাতে এখন নিউটনের মতো হঠাৎ পড়ে পাওয়া সময়। এই সময়ে আতঙ্কিত না হয়ে তোমাদের ভবিষ্যতের দিকে নজর দিতে পারো।যাঁরা চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছ তারা নিজের দূর্বল অংশটুকুতে বেশি সময় দাও। দেখবে তুমি অনেক সবল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে গেছ। যে স্কলারশীপ নিয়ে বিদেশে পড়তে যেতে চাও সে এই সুযোগে ielts, gre, gmat গুলো ঝালিয়ে নাও। সাথে স্কলারশীপ গুলোর আদ্যোপান্ত জেনে সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে তোল।
যে ক্রিয়েটিভ কাজ করতে চাও সে সম্পর্কে যথেষ্ট পড়াশুনা করে নিজের জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধ করো। যে ফ্রিল্যান্সার হতে চাও সে কম্পিউটার এর জ্ঞানকে ঝালাই করে নাও। যে উদ্যোক্তা হতে চাও সে নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করো। হঠাৎ উড়ে আসা এই বিপর্যয় মোকাবিলা করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে তোমাদের তরুণদের। তাই এই পড়ে পাওয়া সময়টাকে কাজে লাগিয়ে মহান বিজ্ঞানী নিউটনের মত করে নিজেকে রাঙিয়ে নাও।আর সুযোগ থাকলে শ্রমজীবী মানুষদের তোমাদের সাধ্যের মধ্যে থেকে সাহায্য করো।